সাংবাদিকের নাম প্রকাশিত: ২১ নভেম্বর, ২০২৪, ১২:৪২ এএম
‘আজকে দেশের মানুষ এই স্বৈরাচার সরকার থেকে মুক্তি চায়। আজকে এই সরকার অত্যন্ত দুর্বল, একটা ধাক্কা দেওয়া বাকী। আমি বিশ্বাস করি এই ফয়সালা রাজপথে হবে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেছেন, রাজপথে ফয়সালা হবে। এই রাজপথ থেকেই আমাদেরকে ধাক্কা দিতে হবে।’
শনিবার (২৮ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী যুবদল আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এসব কথা বলেন।
কয়েকদিন আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ছাত্রদলের ওপর হামলা করে ছাত্রলীগ। এ ছাড়া ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে পদ্মা নদীতে টুস করে ফেলে দেওয়া উচিত’ বলে কটূক্তি করেন স্বয়ং সরকার প্রধান। এ দুই বিষয়ে প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
সম্প্রতি ‘আমি কি অপরাধ করেছি যে আপনারা বলেন আমাকে নামিয়ে দেবেন’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আপনি (প্রধানমন্ত্রী) কি অপরাধ করেননি? আপনি গণতন্ত্র হত্যা করেছেন, ভোটাধিকার হরণ করেছেন, গুম, খুন, বিচার বহির্ভূত হত্যা, মিথ্যা মামলা দিয়ে বিরোধীদের অত্যাচার নির্যাতন করেছেন। আপনি কি অন্যায় করেননি?
তিনি বলেন, আপনি মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছেন। ভোটের অধিকার হত্যা করেছেন। দেশের সেনাবাহিনীকে দুর্বল করার জন্য বিডিআর ক্যাম্পে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছেন। এ দেশের মানুষের পকেটের টাকা লুট করার জন্য বিদ্যুতের ইনডেমনিটি দিয়ে দাম বৃদ্ধি করেছেন। কি অন্যায় করেন নাই? আপনাদের এসব অপরাধের জন্য এদেশের মানুষ আর আপনাদের দেখতে চায় না। আজকে এই সরকারের দেশে-বিদেশে সমর্থন শূন্য হয়ে গেছে। তাই শেখ হাসিনার সরকার আজকে একা হয়ে গেছে।
ছাত্রলীগের উদ্দেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ভালো ছাত্র না হলে তোমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারতে না। আজকে কাদের নির্দেশে তোমরা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করছো। তোমরা কাদের রক্ত নিচ্ছো? ঊর্ধ্বতনদের নির্দেশে তোমরা তোমাদের ভাই, তোমাদের বোনের রক্ত নিচ্ছো। অতীতে তাদের নির্দেশে যারা বিশ্বজিৎ-আবরারকে হত্যা করেছিল তারা তোমাদের নেত্রী ক্ষমতায় থাকতেও রেহাই পায়নি। তোমরাও আগামী দিনে জনতার আদালতে রেহাই পাবে না।
তিনি বলেন, তোমরা বাছাই করা ছাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছো। আজকের এই গায়ের জোরের সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য তোমাদেরকে ব্যবহার করছে। তোমাদেরকে দানবে পরিণত করছে। তোমাদের বলতে চাই নেতাদের প্ররোচনায় নিজেদের জীবনকে শেষ করবে না। এখনো তোমাদের সম্বিত ফিরে আসুক। যাদের পেছনে জনগণের সমর্থন নেই, তারা তোমাদেরকে হাতিয়ার বানিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়।
এ সরকার সর্বক্ষেত্রে ব্যর্থ বলে মন্তব্য করে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, দেশে গণতন্ত্র নেই, মানুষের ভোটাধিকার নেই এবং এদেশের মানুষ আজকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে অসহায়। সরকার দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। কারণ, সিন্ডিকেট দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে জড়িত সরকারের লোকেরা।
এ সময় ছাত্রদলের সাম্প্রতিক আন্দোলনের কথাও উল্লেখ করেন তিনি। বলেন, আমাদের ছাত্রদল ঢাকার রাজপথে তাদের শরীরের রক্ত দিয়ে ধাক্কা দেওয়ার আন্দোলন শুরু করেছে। আমি আশা করি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ সকল অঙ্গ সংগঠন ছাত্রদলের পাশে থেকে একই ইস্যুতে আন্দোলন করতে হবে। আন্দোলনের বিকল্প নেই।
ড. মোশাররফ বলেন, ইস্যু পরিষ্কার। আমাদের আন্দোলন এই সরকারের পদত্যাগ, আমাদের আন্দোলন অবৈধ সংসদ বাতিল, আমাদের আন্দোলনের ইস্যু খালেদা জিয়ার পূর্ণাঙ্গ মুক্তি, আমাদের আন্দোলনের ইস্যু ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে দেশে ফিরিয়ে এনে স্বাধীনভাবে রাজনীতি করার সুযোগ দেওয়া। আমাদের আন্দোলনের ইস্যু নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের ব্যবস্থায় এদেশে একটি নির্বাচন করা। সেই নির্বাচনে জনগণ নিজের হাতে নিজের ভোট দেবে ইভিএমএ নয়। তাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।